ফযর নামাজ আদায়ের নিয়ম ( চিত্রসহ )

ঊষা থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত ফযর নামাজের সময়। ফযর নামাজ ২ নিয়্যত ৪ (চার) রাকাত। প্ৰথম ২ (দুই) রাকাত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা এবং পরের ২ (দুই) রাকাত ফরয।


ফযর ২ রাকাত ফরয নামাজ আদায়ের নিয়ম

ফযর নামাজ আদায়ের নিয়ম

পবিত্রতা অর্জন করে নামাজের নিয়্যত করবে। আপনি ফযর ২ (দুই) রাকাত ফরয নামাজ পড়ছেন মনে মনে এতটুকু থাকাই নিয়্যতের জন্য যথেষ্ট। তারপর তাকবীরে তাহরীমা অর্থাৎ

اللّٰهُ أَكْبَر

(আল্লাহু আকবার) বলে উভয় হাত কান পর্যন্ত উঠাবে । এ ক্ষেত্রে হাতের আঙ্গুলগুলো স্বাভাবিক অবস্থায় ক্বিবলা মুখি থাকবে আর উভয় হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি উভয় কানের লতি বরাবর থাকবে। অথবা আল্লাহু আকবার বলার সময় দুই হাতের আঙ্গুলগুলো মিলিত অবস্থায় উভয় হাত কাঁধ পর্যন্ত উঠাবে।

ফযর নামাজ আদায়ের নিয়ম
তারপর হাত নামিয়ে ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি ও কনিষ্ঠা অঙ্গুলি দ্বরা হালকা বানিয়ে বাম হাতের কবজি ধরবে আর বাকী আঙ্গুলগুলো বাম হাতের উপর রাখবে । অতঃপর যথা স্থানে বাধবে। দাড়ানো অবস্থায় দৃষ্টি থাকবে সেজদার জায়গায়। তারপর ছানা পড়বে

سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ وَتَبَارَكَ اسْمُكَ

وَتَعَالَ جَدُّكَ وَلَا إِلَهَ غَيْرُكَ

উচ্চারণঃ সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা 'ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়া তা'আলা জাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা।

অর্থ : হে আল্লাহ! আপনার পবিত্রতা এবং প্রশংসা বর্ণনা করছি : আপনার নাম বড়ই মহান। আপনার মাহাত্ম্য ও সম্মান অতীব উচ্চ এবং আপনি ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই, যার সামনে মাথা নত করা যায়।

তারপর আউ’জু বিল্লাহি মিনাস শয়তানির রাযিম। বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম- পড়বে 

أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ بِسْمِ اللهِ الرَّحْمنِ الرَّحِيمِ

উচ্চারণঃ আয়ুজু বিল্লাহি মিনাশশাই ত্বনিরাজীম'। বিসমিল্লা হির্রাহ মানির রাহীম''।

অর্থ : বিতারিত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই। পরম করুনাময় দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।


তারপর সূরা ফাতেহা পড়বে

الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَالضَّالِّينَ

উচ্চারণঃ আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন। আর রাহমানির রাহীম। মালিকি ইয়াওমিদ্দীন। ইয়্যাকা না'বুদু ওয়া ইয়্যাকানাসতা ঈন। ইহদিনাস সিরাত্বাল মুসতাক্বীম। সিরাতাল লাযীনা আন'আমতা আলাইহিম, গায়রিল মাগদূবি আলাইহিম ওয়ালাদদ্বোয়াল্লিন। আমীন”।

অর্থ : (১) যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ তা'আলার যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালন কর্তা। (২) যিনি নিতান্ত মেহেরবান ও দয়ালু। (৩) যিনি বিচার দিনের মালিক। (৪) আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র সাহায্য প্রার্থনা করি। (৫) আমাদেরকে সরল পথ দেখাও, (৬) সে সমস্ত লোকদের পথ যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ। (৭) তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গজব নাযিল হয়েছে এবং পথভ্রষ্ট হয়েছে।


তারপর কোরআনে কারীম থেকে যে কোন একটি সূরা মিলাবে। যেমন সূরা আল-ফীল।

أَلَمْ تَرَ كَيْفَ فَعَلَ رَبُّكَ بِأصْحُب الفيل أَلَمْ يَجْعَلْ كَيْدَهُمْ فِي تَضْلِيلٍ وَأَرْسَلَ عَلَيْهِمْ طَيْرًا أَبَابِيلَ تَرْمِيهِم بِحِجَارَةٍ مِّن سِجِّيل فَجَعَلَهُمْ كَعَصْفِ مَّاكُولٍ

উচ্চারণঃ আলাম তারা কাইফা ফা'আলা রাব্বুকা বিআসহা-বিল ফীল। আলাম ইয়াজ'আল কাইদাহুম ফী তাদলীল ওয়া আরছালা ‘আলাইহিম তাইরান আবা-বীল। তারমীহিম বিহিজারাতিম মিন ছিজ্জীল । ফাজাআলাহুম কা’আসফিম মা'কূল।

অর্থ : আপনি কি দেখেননি আপনার' পালনকর্তা হস্তীবাহিনীর সাথে কিরূপ ব্যবহার করেছেন? তিনি কি তাদের চক্রান্ত নস্যাৎ করে দেননি? তিনি তাদের উপর প্রেরণ করেছেন ঝাঁকে ঝাঁকে পাখী, যারা তাদের উপর পাথরের কংকর নিক্ষেপ করছিল। অতঃপর তিনি তাদেরকে ভক্ষিত তৃণসদৃশ করে দেন।''

ফযর নামাজ আদায়ের নিয়ম

তারপর তাকবীর اللّٰهُ أَكْبَرবলে রুকুতে যাবে, হাতের আংগুলগুলো ফাকা রেখে দুই হাত দ্বারা উভয় হাটুকে ভালভাবে আকড়ে ধরবে। এবং মাথা, পিঠ ও মাজা সমান থাকবে কোন উঁচু নিচু থাকবে না। রুকুতে থাকা অবস্থায় দৃষ্টি থাকবে পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলির দিকে। তারপর রুকুর তাসবীহ তিন বার সুবহানা রাব্বিয়াল আজীম।পড়বে। তবে পাঁচ বার, সাত বারও পড়তে পারবে।

سُبحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيمِ

উচ্চারণঃ সুবহানা রাব্বিয়াল আজীম।

অর্থ : আমি আমার 'মহান প্রভুর পবিত্রতা বর্ণনা করছি।

ফযর নামাজ আদায়ের নিয়ম

তারপর সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ বলে রুকু থেকে সোজা হয়ে দাড়াবে।

سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ

উচ্চারণঃ সামিআল্লাহু লিমান হামিদা।

অর্থ : আল্লাহতায়ালা' প্রশংসাকারীর প্রশংসা শোনেন।''


তারপর রুকু হতে সোজা হয়ে দাড়ানোর পর নিম্নের

দোয়া পড়বে।

رَبَّنَالَكَ الْحَمْدُ - حَمْدًا كَثِيرًا طَيْبًا مُبَارَكًا

فِيهِ

উচ্চারণঃ রাব্বানা লাকাল হামদ, হামদান কাছিরান, তাইয়্যেবান, মোবারাকান ফীহি'।

অর্থ : হে আল্লাহ! সমস্ত প্রশংসা তোমার জন্য, এমন ব্যাপক প্রশংসা, ি যাতে রয়েছে খুবই উত্তম বরকত। এ প্রশংসায় মঙ্গল হোক, বরকত হোক।

ফযর নামাজ আদায়ের নিয়ম
তারপর اللّٰهُ أَكْبَر‎ বলে সেজদায় যাবে। সেজদায়যাওয়ার সময় দুই হাতে হাটু ধরে সর্বপ্রথম উভয় হাটু একত্রে জমীনে রাখবে। তারপর হাতের আঙ্গুলগুলো মিলানো অবস্থায় দুই হাত জমীনে একত্রে রাখবে। এবং চেহারার চওড়া অনুযায়ী দুই হাতের মাঝে ফাঁকা রাখবে। তারপর দুই হাতের মাঝে সেজদা করবে প্রথমে নাক তারপর কপাল রাখবে উভয় হাতের মধ্যখানে বৃদ্ধ আঙ্গুলদ্বয়ের বরাবরে নাক রাখবে। নজর নাকের উপর রাখবে। পুরুষের পেট রান থেকে বাহু পাজর থেকে হাতের কনুই জমীন থেকে পৃথক রাখবে। পায়ের আঙ্গুল সমূহকে কিবলামুখী করে রাখবে এবং দুই পায়ে গুড়ালি মিলিয়ে না রেখে বরং টাকনু কাছা কাছি রাখবে। যথা সম্ভব পায়ের আঙ্গুলগুলো জমীনের সাথে চেপে ধরে আঙ্গুলের অগ্রভাগ ক্বিবলার দিকে রাখবে। সেজদার মধ্যে তিন বার সুবহানা রাব্বিয়াল আ'লা।পড়বে। তবে পাঁচ বার, সাত বারও পড়তে পারবে।


سُبحَانَ رَبِّيَ الْأَعْلَى 

উচ্চারণঃ সুবহানা রাব্বিয়াল আ'লা।

অর্থ : আমার মহান' প্রভুর পবিত্রতা বর্ণনা করছি

ফযর নামাজ আদায়ের নিয়ম

তারপরে اللّٰهُ أَكْبَر‎ বলে সেজদা থেকে উঠে বসবে। প্রথম কপাল তারপর নাক তারপর হাত উঠাবে। তারপর বাম পা জমীনে বিছিয়ে তার উপর বসবে। আর ডান পা দার করিয়ে রাখবে। পায়ের আঙ্গুলগুলো কিবলামুখী করে জমীনে রাখবে। দুই হাত উভয় রানের উপর রাখবে। হাতের আঙ্গুলগুলো সামান্য ফাঁকা রেখে আঙ্গুলের ( মাথার অগ্রভাগ হাটুর কিনারা বরাবর রাখবে এবং নিম্নের দোয়া পড়বে।


اللَّهُمَّ اغْفِرْلِي وَارْحَمْنِيْ وَاهْدِنِي وَاعْفِنِيْ وَارْزُقْنِي وَارْبِرْنِي وَارْفَعْنِي

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মাগ ফিরলী, ওয়ারহামনী, ওয়াহদিনী, ওয়া’ফিনী, ওয়ার জুকনী, ওয়াজ বিরণী, ওয়ার ফানি।

অর্থ : হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা কর, 'আমার প্রতি দয়া কর, 'আমাকে হেদায়েত দান কর (অর্থাৎ দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখ) আমাকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখ,' আমার রুজির ব্যবস্থা করে দাও, আমাকে সুস্থতা দান কর, আমার মান মর্যাদা বাড়িয়ে দাও।

ফযর নামাজ আদায়ের নিয়ম

সেজদাতেও প্রথম সেজদার মতই সেজদার মধ্যে তিন

বার সুবহানা রাব্বিয়াল আ'লা।পড়বে। তবে পাঁচ বার, সাত বারও পড়তে পারবে।। 

سُبحَانَ رَبِّيَ الْأَعْلَى

উচ্চারণঃ সুবহানা রাব্বিয়াল আ'লা।

অর্থ : আমার মহান' প্রভুর পবিত্রতা বর্ণনা করছি

তদ্বিতীয় সেজদা শেষ করে আবার বলে সেজদা থেকে সোজা দাড়িয়ে যাবে। তারপর দ্বিতীয় রাকাতেও প্রথম রাকাতের মতই। প্রথম সূরা ফাতেহা পড়বে।


বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম- পড়বে

بِسْمِ اللهِ الرَّحْمنِ الرَّحِيمِ

 উচ্চারণঃ বিসমিল্লা হির্রাহ মানির রাহীম।

অর্থ : পরম করুনাময়' দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।


সূরা ফাতেহা পড়বে

الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَالضَّالِّينَ

উচ্চারণঃ আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামীন। আর রাহমানির রাহীম। মালিকি ইয়াওমিদ্দীন। ইয়্যাকা না'বুদু ওয়া ইয়্যাকানাসতা ঈন। ইহদিনাস সিরাত্বাল মুসতাক্বীম। সিরাতাল লাযীনা আন'আমতা আলাইহিম, গায়রিল মাগদূবি আলাইহিম ওয়ালাদদ্বোয়াল্লিন। আমীন”।

অর্থ : (১) যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ তা'আলার যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালন কর্তা। (২) যিনি নিতান্ত মেহেরবান ও দয়ালু। (৩) যিনি বিচার দিনের মালিক। (৪) আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র সাহায্য প্রার্থনা করি। (৫) আমাদেরকে সরল পথ দেখাও, (৬) সে সমস্ত লোকদের পথ যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ। (৭) তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গজব নাযিল হয়েছে এবং পথভ্রষ্ট হয়েছে।


তারপর কোরআনে কারীম থেকে যে কোন একটি সূরা

মিলাবে। যেমন সূরা কুরাইশ।


لإيلفِ قُرَيْشِ الْفِهِمْ رَحْلَةَ الشَّتَاءِ وَالصَّيْفِ فَلْيَعْبُدُوا رَبَّ هَذَا الْبَيْتِ الَّذِي أَطْعَمَهُم مِّن جُوعِ وَءَامَنَهُم مِّنْ خَوْفٍ

উচ্চারণঃ লিঈলা-ফি কুরাইশ। ঈলা-ফিহিম রিহলাতাশশিতাই ওয়াসসাঈফ। ফালইয়া'বুদূরাব্বা হা-যাল বাঈত। আল্লাযীআতা আমাহুম মিন জুইওঁ ওয়া আমানাহুম মিন খাওফ।

অর্থ : কোরাইশের আসক্তির কারণে, আসক্তির' কারণে তাদের শীত ও গ্রীষ্মকালীন সফরের। অতএব তারা যেন এবাদত করে এই ঘরের পালনকর্তার যিনি তাদেরকে ক্ষুধায় আহার দিয়েছেন এবং যুদ্ধভীতি থেকে তাদেরকে নিরাপদ করেছেন।''

ফযর নামাজ আদায়ের নিয়ম

তারপর তাকবীর বলে রুকুতে যাবে, হাতের আংগুলগুলো ফাকা রেখে দুই হাত দ্বারা উভয় হাটুকে ভালভাবে আকড়ে ধরবে। এবং মাথা, পিঠ ও মাজা সমান থাকবে কোন উঁচু নিচু থাকবে না। রুকুতে থাকা অবস্থায় দৃষ্টি থাকবে পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলির দিকে। তারপর রুকুর তাসবীহ তিন বার পড়বে। তবে পাঁচ বার, সাত বারও পড়তে পারবে।


سُبحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيمِ 

উচ্চারণঃ সুবহানা রাব্বিয়াল আজীম।

অর্থ : আমি আমার মহান' প্রভুর পবিত্রতা বর্ণনা করছি।

ফযর নামাজ আদায়ের নিয়ম

তারপর সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ বলে রুকু থেকে সোজা হয়ে দাড়াবে।

সোজা হয়ে দাড়াবে।

سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ

উচ্চারণঃ সামিআল্লাহু লিমান হামিদা

অর্থ : আল্লাহতায়ালা' প্রশংসাকারীর প্রশংসা শোনেন।।


তারপর রুকু হতে সোজা হয়ে দাড়ানোর পর নিম্নের দোয়া পড়বে।

رَبَّنَالَكَ الْحَمْدُ - حَمْدًا كَثِيرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا

فيه

উচ্চারণঃ রাব্বানা লাকাল হামদ, 'হামদান কাছিরান, তাইয়্যেবান, মোবারাকান ফীহি' ।

অর্থ : হে আল্লাহ! সমস্ত প্রশংসা তোমার জন্য,' এমন ব্যাপক প্রশংসা, যাতে রয়েছে খুবই উত্তম বরকত। এ প্রশংসায় মঙ্গল হোক, বরকত হোক।

ফযর নামাজ আদায়ের নিয়ম

তারপর اللّٰهُ أَكْبَرবলে সেজদায় যাবে। সেজদায় যাওয়ার সময় দুই হাতে হাটু ধরে সর্বপ্রথম উভয় হাটু একত্রে জমীনে রাখবে। তারপর হাতের আঙ্গুলগুলো মিলানো অবস্থায় দুই হাত জমীনে একত্রে রাখবে। এবং চেহারার চওড়া অনুযায়ী দুই হাতের মাঝে ফাঁকা রাখবে। তারপর দুই হাতের মাঝে সেজদা করবে প্রথমে নাক তারপর কপাল রাখবে উভয় হাতের মধ্যখানে বৃদ্ধ আঙ্গুলদ্বয়ের বরাবরে নাক রাখবে। নজর নাকের উপর রাখবে। পুরুষের পেট রান থেকে বাহু পাজর থেকে হাতের কনুই জমীন থেকে পৃথক রাখবে। পায়ের আঙ্গুল সমূহকে কিবলামুখী করে রাখবে এবং দুই পায়ে গুড়ালি মিলিয়ে না রেখে বরং টাকনু কাছা কাছি রাখবে। যথা সম্ভব পায়ের আঙ্গুলগুলো জমীনের সাথে চেপে ধরে আঙ্গুলের অগ্রভাগ ক্বিবলার দিকে রাখবে। সেজদার মধ্যে তিন বার সুবহানা রাব্বিয়াল আ'লা।পড়বে। তবে পাঁচ বার, সাত বারও পড়তে পারবে।


سُبحَانَ رَبِّيَ الْأَعْلَي 

উচ্চারণঃ সুবহানা রাব্বিয়াল আ'লা।

অর্থ : আমার মহান' প্রভুর পবিত্রতা বর্ণনা করছি

ফযর নামাজ আদায়ের নিয়ম

তারপর اللّٰهُ أَكْبَر বলে সেজদা থেকে উঠে বসবে। প্রথমকপাল তারপর নাক তারপর হাত উঠাবে। তারপর বামপা জমীনে বিছিয়ে তার উপর বসবে। আর ডান পা দার করিয়ে রাখবে । পায়ের আঙ্গুল গুলো কিবলামুখী করেজমীনে রাখবে। দুই হাত উভয় রানের উপর রাখবে। হাতের আঙ্গুলগুলো সামান্য ফাঁকা রেখে আঙ্গুলের মাথার অগ্রভাগ হাটুর কিনারা বরাবর রাখবে এবং নিম্নের দোয়া পড়বে।


اللَّهُمَّ اغْفِرْلِيْ وَارْحَمْنِيْ وَاهْدِنِي وَاعْفِنِيْ وَارْزُقْنِيْ وَازْبِرْنِي وَارْفَعْنِي

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মাগ ফিরলী, ওয়ারহামনী, ওয়াহদিনী, ওয়া’ফিনী, ওয়ার জুকনী, ওয়াজ বিরণী, ওয়ার ফানি।

অর্থ : হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা কর,' আমার প্রতি দয়া কর, আমাকে হেদায়েত দান কর (অর্থাৎ দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখ)' আমাকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখ, 'আমার রুজির ব্যবস্থা করে দাও, আমাকে সুস্থতা দান কর, আমার মান মর্যাদা বাড়িয়ে দাও।

ফযর নামাজ আদায়ের নিয়ম

তারপর اللّٰهُ أَكْبَر বলে দ্বিতীয় সেজদা করবে। দ্বিতীয় সেজদাতেও প্রথম সেজদার মতই সেজদার মধ্যে তিন বার সুবহানা রাব্বিয়াল আ'লা।পড়বে। তবে পাঁচ বার, সাত বারও পড়তে পারবে।।


سُبحَانَ رَبِّيَ الْأَعْلَي

 উচ্চারণঃ সুবহানা রাব্বিয়াল আ'লা।

অর্থ : আমার মহান প্রভুর 'পবিত্রতা বর্ণনা করছি

দ্বিতীয় সেজদা শেষ করে اللّٰهُ أَكْبَرবলে সেজদা থেকে উঠে দুই সেজদার মাঝে বসার ন্যায় বসবে এবং তাশাহ্হুদ পড়বে।

ফযর নামাজ আদায়ের নিয়ম

التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَواةُ والطَّيِّبَاتُ السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ - السَّلَامُ عَلَيْنَا وَ عَلَى عِبَادِ اللهِ الصَّالِحِينَ أَشْهَدُ اَن لَّا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَأَشْهَدُ أَنْ مُحَمَّدًا عَبْدُه وَرَسُوْلُهُ

উচ্চারণঃ আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াস্সালাওয়াতু ওয়াত তাইয়্যিবাত। আসসালামু আলাইকা আইয়্যুহান্নাবীয়্যু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু। আসসালামু আলাইনা ওয়া আ'লা ইবাদিল্লাহিস সালিহীন। আশহাদু আল লা ইলাহ ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদুআন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু।

অর্থ : সমস্ত সম্মান মর্যাদা আল্লাহতায়ালার জন্য এবং নামায (শারীরিক ইবাদাত) এবং আত্মিক (জীবাত্মার) মানসিক (বক্ষস্থিতঅদৃশ্য গোশত পিন্ড কলব) ও শারীরিক (দেহাভ্যন্তরস্থ রিপুর অনিষ্টমুক্ত') 'পবিত্রতা বা পরিশুদ্ধতা শুধুমাত্র আল্লাহতায়ালার জন্য নিবেদিত । হে নবী! আপনার প্রতি সালাম ('শান্তি) রহমত (করুণা)' এবং বরকত (অনুগ্রহ) অবারিত ধারায় বর্ষিত হোক। আমাদের প্রতি এবং সালিহীন (আত্মিক মানসিক শারীরিক পরিশুদ্ধসম্পন্ন)' বান্দাদের প্রতিও সীমাহীন সালাম (শান্তি) বর্ষিত হোক।' আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই এবং আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি''


ওয়াসাল্লাম তাঁর বান্দাহ ও রাসূল।

তাশাহ্হুদ পড়ার সময় ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি ও মধ্যমা অঙ্গুলি দ্বারা হালকা বানাবে এবং okও মধ্যমা অঙ্গুলি দ্বারা হালকা বানাবে এবং৷ আশহাদু আল ল্লাহ বলার সময় শাহাদাত অঙ্গুলি উঠাবে ইল্লাল্লাহ বলার সময় নামিয়ে ফেলবে। বাকী দুটি আঙ্গুল তালুর সাথে মিলিয়ে রাখবে।


তাশাহুদ শেষ করে দরুদে ইব্রাহীম পড়বে।

اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَهِيمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ اللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آل مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَ هِيمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ

উচ্চারণঃ আল্লাহুমা ছাল্লি আ'লা মুহাম্মদিওঁ ওয়া আ'লা আলি মুহাম্মাদিন কামা সাল্লাইতা আ'লা ইবরাহীম ওয়া আ'লা আলি ইবরাহীম ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ। আল্লাহুমা বারিক আলা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আ'লা আলি মুহাম্মাদিন কামা বারাকতা আ'লা ইবরাহীম ওয়া আ'লা আলি ইবরাহীম ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।

অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তার বংশধরদের প্রতি রহমত বর্ষণ করো।' যেমন রহমত বর্ষণ করেছো হযরত ইব্রাহিম' আলাইহিস সালাম এবং তার বংশধরদের প্রতি। নিশ্চয়ই তুমি' অত্যন্ত প্রশংসিত এবং মহান। হে আল্লাহ হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর বংশধরদের প্রতি বরকত (অনুগ্রহ) বর্ষণ করো যেমন বরকত (অনুগ্রহ) বর্ষণ করেছো হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এবং তার বংশধরদের প্রতি। হেপ্ৰাপ্য।''


তারপর দোয়ায়ে মাছুরা পড়বে।

اللَّهُمَّ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي ظُلْمًا كَثِيرًا وَ دَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ فَاغْفِرْلِي مَغْفِرَةً مِّنْ عِنْدِكَ وَارْحَمْنِي إِنَّكَ انْتَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ইন্নী জালামতু নাফসী' জুলমান কাসীরাওঁ ওয়া লা-ইয়াগফিরুজ্জুনুবা ইল্লা আনতা, ফাগফিরলী, মাগফিরাতাম মিন ইনদিকা, ওয়ারহামনী ইন্নাকা আনতাল গাফুরুর রাহীম।

অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আমার আত্মার উপর বড়ই অত্যাচার করেছি এবং তুমি ভিন্ন কেউই পাপসমূহ ক্ষমা করতে পারে না'। অতএব তুমি নিজ হাতে আমাকে ক্ষমা করো এবং আমার উপর রহমত (করুণা) বর্ষণ করো। নিশ্চয়ই তুমি ক্ষমাশীল ও দয়াবান।

ফযর নামাজ আদায়ের নিয়ম

তারপর (আস্সালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ) বলে সালাম ফিরাবে। প্রথমে ডান পাশে তারপর বাম পাশে। সালাম ফিরানোর সময় দৃষ্টি থাকবে কাঁধের দিকে ডান পাশে সালাম ফিরানোর সময় ডান কাঁধের দিকে আর বাম পাশে ফিরানোর সময় বাম কাঁধের দিকে।


২ রাকাত সুন্নাত নামাজ আদায়ের নিয়ম


ফরযের পূর্বে দুই রাকাত নামাজ আদায় করা সুন্নাত। সুন্নাত নামাজ উপরে বর্ণিত ফরয নামাজের মতই নিয়্যত করবেন, ফযরের ২ রাকাত সুন্নাত নামাজ পড়ছেন মনে মনে এতটুকু থাকাই নিয়্যতের জন্য যথেষ্ট। তারপর তাকবীরে তাহরীমা, ছানা, প্ৰতি রাকাতে সূরা ফাতেহার পর কোরআনে কারীম থেকে যে কোন একটি সূরা মিলাবে। তারপর একইভাবে রুকু, সেজদাহ, এবং দ্বিতীয় রাকাত শেষে তাশাহ্হুদ, দুরুদ শরীফ ও দোয়ায়ে মাছুরা পড়ে সালাম ফিরাবে।


আরো পড়ুন....

যুহর নামাজ চিত্রসহ আসর নামাজ চিত্রসহ মাগরিব নামাজ চিত্রসহ
ইশার নামাজ চিত্রসহ বিতর নামাজ চিত্রসহ প্রথম পাত >>

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন