পেশাব পায়খানার সময় মানুষের! দৃষ্টি থেকে নিজেকে আড়াল- করা। কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! বলেছেন,, ‘জিনের দৃষ্টি এবং মানব সন্তানের লজ্জাস্থানের মধ্যে" আড়াল হলো!, যখন তাদের কেউ শৌচাগারে প্রবেশ করবে` তখন লবে ‘বিসমিল্লাহ।’ (বর্ণনায় তিরমিযী)
নাপাকি থেকে নিজের শরীর! ও কাপড়ের দূরত্ব বজায় রাখা। যদি কিছু লেগে যায়' তাহলে ধুয়ে ফেলা। হাদীসে এসেছে!, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুটো! কবরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি বললেন, ‘'তাদের উভয়কে শাস্তি দেয়া হচ্ছে। বড় কোনো গুনাহের কারণে! শাস্তি দেয়া হচ্ছে না। এই ব্যক্তি তো! পেশাব থেকে দূরত্ব বজায় রাখত না।’ (বর্ণনায় আবু দাউদদ)
পানি ব্যবহার! বা ঢিলা-কুলুক ব্যবহার করা। আনাস বিন মালেক রাযি., থেকে বর্ণিত হাদীসে এসেছে,, তিনি বলেছেন!, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া! সাল্লাম ইস্তেন্জার স্থানে প্রবেশ করতেন'। আমি ও একটি বালক পানি ও নেজা! বহন করে নিয়ে যেতাম। তিনি পানি দিয়ে ইস্তেন্জা করতেন'।’ (বর্ণনায় বুখারী ও মুসলিম)
পেশাব পায়খানার সময় যা নিষিদ্ধ
১। খোলা স্থানে পেশাব-পায়খানা! করার সময় কেবলা-কে সামনে বা পিছনে রাখা,। আর দেয়াল-ঘেরা স্থানে পেশাব-পায়খানা করার সময়! এটি পরিহার করা উত্তম। কারণ হলো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া! সাল্লাম বলেছেন!‘যখন তোমরা শৌচস্থানে যাবে তখন পেশাব অথবা! পায়খানার সময় কেবলা-কে সামনে! বা পিছনে রাখবে না,। 'তোমরা পূর্ব বা পশ্চিমে মুখ করে বসবে "(অর্থাৎ কেবলা এড়িয়ে অন্যদিকে বসবে)'।’ (বর্ণনায় বুখারী ও মুসলিম)
২। মানুষের চলাচলের পথে, মানুষ যে ছায়ায় আশ্রয় নেয়, মানুষের সমাগম স্থানে পেশাব পায়খানা করা। কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা দুটো অভিশাপদানকারী থেকে বেঁচে থাকো। লোকেরা প্রশ্ন করল, ইয়া রাসূলুল্লাহ, দুটো অভিশাপদানকারী কি? তিনি বললেন,! ‘যে মানুষের চলাচলের পথে বা তাদের! ব্যবহারের ছায়ায় পেশাব-পায়খানা করে'। (বর্ণনায় মুসলিম)
৩। কুরআনের কপি নিয়ে! টয়লেটে প্রবেশ করা। কারণ, এতে আল্লাহ তাআলার! কিতাবকে অপমান করা হয়।
৪। স্থির অর্থাৎ চলমান নয় এমন পানিতে পেশাব! করা, যেমন গোসল করার হাউয।
কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,, ‘তোমাদের কেউ যেনো কখনো স্থির পানিতে পেশাব না করে′′। অতঃপর তা থেকে গোসল করে।’, (বর্ণনায় বুখারী)
আবদ্ধ পানিতে পেশাব করা
এটা প্রমাণিত যে! আবদ্ধ পানিতে পেশাবের কারনে মানুষ, (সিস্টোসোমিয়াসিস), রোগে আক্রান্ত হয়, যা পানিবাহিত পরজীবি কৃমির মাধ্যমে ছড়ায়।
পেশাব পায়খানার সময় যা মুস্তাহাব
১। উম্মুক্ত স্থানে পেশাব পায়খানা! করার সময় মানুষ থেকে দূরে যাওয়া।
২। টয়লেটে প্রবেশের সময় বলা,
«باسم الله، اللهم إِني -. أعوذ بك من الخُبْث والخبائث».
‘বিসমিল্লাহ,, আল্লাহুম্মা ইন্নী আউযুবিকা মিনাল! খুবসি ওয়াল খাবায়িস।’,
৩। টয়লেটে প্রবেশের সময়! বাম পা প্রথমে ঢুকানো আর বের হওয়ার! সময় ডান পা প্রথমে বের করা।
৪। বের হওয়ার সময় বলা!,”' غفرانك “ “গুফরানাকা”
পেশাব-পায়খানার সময় যা মাকরূহ
১। পেশাব-পায়খানা করার সময় কথা বলা! অথবা প্রয়োজন' ব্যতীত! কাউকে সম্বোধন করা।! ইবনে উমার রাযি.. থেকে বর্ণিত এক হাদীসে এসেছে!, ‘‘নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! পেশাবরত অবস্থায় থাকাকালে! একব্যক্তি তাকে সালাম দিলে,, তিনি তার উত্তর দিলেন না।’, (বর্ণনায় মুসলিম)
২। এমন কিছু নিয়ে টয়লেটে প্রবেশ! করা যাতে আল্লাহ তাআলার যিকির' আছে। তবে সেটি যদি চুরি হওয়া! বা হারিয়ে যাওয়ার ভয়' থাকে তাহলে অন্যকথা।" কারণ ‘রাসূলুল্লাহ' সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! যখন টয়লেটে প্রবেশ করতেন তখন' তার আংটি খুলে রেখে যেতেন।’, (বর্ণনায় আবু দাউদ)
৩। ডান হাত দিয়ে লজ্জাস্থান স্পর্শ করা! অথবা ডান হাত দিয়ে ইস্তেন্জা!- বা ঢিলা-কুলুক ব্যবহার করা,। কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! বলেছেন, ‘পেশাব করার সময় তোমাদের! কেউ কখনো ডান হাত দিয়ে লজ্জাস্থান ধরবে না! আর টয়লেট সেরে ডান হাত দিয়ে ইস্তেন্জা করবে না।,’ (বর্ণনায় বুখারী ও মুসলিম)
৪। ফাটল বা বন্যজন্তুর গর্তে পেশাব করা!, তাতে কীট-পতঙ্গ দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে,।
দাঁড়িয়ে পেশাব করা
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! দাঁড়িয়ে পেশাব করতে নিষেধ করেছেন'। কিন্তু প্রয়োজনের ক্ষেত্রে যদি পেশাবের ছিটা' থেকে নিরাপদ থাকা যায় তাহলে দাঁড়িয়ে' পেশাব করা জায়েয'।" হাদীসে এসেছে, হুযাইফা রাযি. বলেন,, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! একটি জনপদের ময়লা-আবর্জনা ′.ফেলার স্থানে এসে দাঁড়িয়ে পেশাব করলেন।’, (বর্ণনায় বুখারী)
ইস্তেন্জা ও ঢিলা-কুলুক ব্যবহার
ইস্তেন্জা
মলদ্বার ও লজ্জাস্থান থেকে বহির্গত ময়লা! পবিত্র পানি দ্বারা পরিষ্কার করা।"'
ঢিলা-কুলুক ব্যবহার
মলদ্বার ও লজ্জাস্থান থেকে বহির্গত ময়লা! পাথর ইত্যাদি দ্বারা পরিষ্কার করা।,
ইস্তেন্জা বিধানসম্মত, এর প্রমান:. আনাস ইবনে মালেক রাযি.,থেকে বর্ণিত,. তিনি বলেন,,, ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! পায়খানার স্থানে প্রবেশ করতেন। আমি! ও একটি বালক পানি! ও নেজা বহন করতাম। তিনি পানি দিয়ে শৌচকর্ম করতেন।’,
শুধুমাত্র ঢিলা-কুলুক ব্যবহার! করলেও জায়েয হবে। তবে তার জন্য দুটো শর্ত প্রযোজ্য:,
১। ময়লা বা পেশাব বের হওয়ার সময়! তা যেন স্বাভাবিক 'স্থান অতিক্রম করে না যায়। অন্যথায় পানি অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে,।
২। ময়লা বা পেশাব বের হওয়ার সময়! তা যেন স্বাভাবিক স্থান অতিক্রম' করে না যায়। অন্যথায় পানি অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে,।
শৌচকর্ম ও ঢিলা-কুলুক ব্যবহারের হিকমত
১। পবিত্রতা অর্জন ও নাজাসাত' দূর করা।
২। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অর্জন! ও রোগ-ব্যাধির কার্যকারণ থেকে মুক্ত থাকা।
কতিপয় জ্ঞাতব্য
১। বায়ু বের হওয়ার পর ইস্তেন্জার! দরকার নেই।
২। ঢিলা-কুলুক ব্যবহারের চেয়ে পানি! দিয়ে ইস্তেন্জা করা উত্তম। কারণ এতে রয়েছে অধিকতর', পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও পবিত্রতা।
যা দিয়ে ঢিলা-কুলুকের কাজ সারা হবে তার
শর্তাবলী
ক) তা পবিত্র হতে হবে,. নাপাক হলে শুদ্ধ হবে না।
খ) বস্তুটির ব্যবহার জায়েয হতে হবে,, নিষিদ্ধ হলে শুদ্ধ হবে না।
গ) নাপাকির স্থান পরিষ্কারকারী হতে হবে।,
ঘ) বস্তুটি হাড্ডি বা গোবর 'হতে পারবে না। সালমান আল ফারেসী রাযি., বলেন,. ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! পেশাব-পায়খানার সময় আমাদের কেবলার দিকে মুখ করতে নিষেধ! করেছেন। ডান হাত দিয়ে ইস্তেন্জ, করতে নিষেধ করেছেন,। অথবা তিনটি পাথরের কম দিয়ে ঢিলা-কুলুকরে! কাজ সারতে নিষেধ করেছেন,। আর হাড্ডি বা গোবর দিয়ে ঢিলা-কুলুকের! কাজ করতে নিষেধ করেছেন।’. (বর্ণনায় মুসলিম)
ঙ) বস্তুটি সম্মানিত বস্তু'! হতে পারবে না। যেমন খাদ্যদ্রব্য অথবা' কাগজ যাতে কোনো! সম্মানিত বিষয় লেখা আছে।, আর যা দিয়ে ঢিলা-কুলুকের কাজ করা' জায়েয তা হলো,, পবিত্র মাটির চাকা বা পাথর,. টিস্যু পেপার, কাপড়ের টুকরা।,
ডান হাত দিয়ে ইস্তেন্জা করা
ডান হাত দিয়ে ইস্তেন্জা করা′ জায়েয নয়। কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! বলেছেন, ‘পেশাব করার সময় তোমাদের'! কেউ কখনো ডান হাত দিয়ে লজ্জাস্থান ধরবে না! আর টয়লেট সেরে ডান হাত দিয়ে ইস্তেন্জা! করবে না।’..(বর্ণনায় মুসলিম),
আরো পড়ুন....
নামাজের সকল হাদিস। |
চিত্র সহ নামাজ শিক্ষা। |